পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (বা.প.ই) কতৃক আয়োজিত "জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং টেকসই উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট" শীর্ষক সেমিনার ২০২৫
পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (বা.প.ই) কতৃক আয়োজিত "জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং টেকসই উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট" শীর্ষক সেমিনার ২০২৫
পরিবেশবিদ, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, স্থপতি, নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, নীতি বিশ্লেষক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞসহ সমমনা পেশাজীবি, যাদের পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে একাডেমিক ডিগ্রী রয়েছে তাদের নিয়ে ২০২১ সালে যাত্রা শুরু করেছিলো পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (বি.আই.ই)।
২৫ এপ্রিল, শুক্রবার, ২০২৫ইং তারিখে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের বার্জার সেমিনার হলে গত ২২ই এপ্রিল, বিষয় ধরিত্রী দিবসকে কেন্দ্র করে 'জলবায়ু সহনশীলতা ও টেকসই উন্নয়ন: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত' শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে এই পেশাজীবী সংগঠনটি।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশবিদ
ইনস্টিটিউট এর সম্মানিত সভাপতি পরিবেশবিদ-প্রকৌশলী জনাব এস. এম. খোরশেদ আলম, বাংলাদেশ
স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ, সংগঠনটির উপদেষ্টা, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক
মহাপরিচালক ও রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী-পরিবেশবিদ ড সুলতান আহমেদ,
পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট এর উপদেষ্টা ও লিডিং ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য
স্থপতি-পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মওলা, বাংলাদেশ পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট এর উপদেষ্টা ও হাউজ বিল্ডিং রিসার্চ
ইনস্টিটিউটের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা স্থপতি-পরিবেশবিদ মো. নাফিজুর রহমান এবং
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের চিফ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার ড. এ এস এম
ওবায়দুল্লাহ মাহমুদ। তারা তাদের বক্তব্যে পরিবেশের প্রতি সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা
অবলম্বনের আহবান জানান।
স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি অধ্যাপক ড. আবু
সাঈদ এম আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, পরিবেশকে
জানা ও বোঝা এবং অতীত ইতিহাসের আলোকে উন্নয়ন করা উচিত। আমাদের রাজধানী ঢাকায় একসময়
জলাভূমির অসাধারণ নেটওয়ার্ক ছিল। ইউরোপের শহরগুলোতে দেখবেন, সেখানে সড়কপথে গাড়ি চলে, ওপরে মেট্রোরেল চলে,
আবার পানিপথেও শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে যাওয়া যায়। ঢাকার
ক্ষেত্রে প্রকৃতিপ্রদত্ত সেই সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা নষ্ট হয়ে গেছে। জলকেন্দ্রিক
এই নেটওয়ার্ক সচল থাকলে আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা বহুমাত্রিক হতো, আমরা যানজটে কষ্ট পেতাম না। তবে অনেক সংকট থাকলেও অংশীদারিত্বভিত্তিক
পরিকল্পনার মাধ্যমে এখনো মানবিক, ন্যায্য ও সুন্দর নগর
গড়া সম্ভব। সেই সময় ফুরিয়ে যায়নি।
ডিং, স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এন্ড ডিজাইন
সভাপতি, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট
পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক
সাবেক সচিব ও রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান
স্থপতি আবু সাঈদের বক্তব্যের সূত্র ধরে
বন্যাপ্রবাহ এলাকায় জিরো ফার দেওয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেন তিনি। এছাড়া কেবল ঢাকা
নয়, সারাদেশের প্রতিটি এলাকার পরিবেশ নিয়ে ভাবার ওপর জোর
দেন তিনি।
পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট এর উপদেষ্টা, লিডিং ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য ও বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান স্থপতি-পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. কাজী আজিজুল মওলা বলেন, ম্যানেজ করতে পারলে ঢাকা শহরের জনঘনত্ব কোনো সমস্যা নয়, বরং এই জনশক্তিকে আমরা কাজে লাগাতে পারি ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে।
পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট এর উপদেষ্টা ও হাউজ
বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা স্থপতি-পরিবেশবিদ মো.
নাফিজুর রহমান গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেশন সম্পর্কে কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্টিফিকেশন, স্রেডার বীর বা বিল্ডিং এনার্জি এফিশিয়েন্সি
রেটিং পদ্ধতি এবং এইচবিআরআই-এর গ্রিন-আর্ক সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
নাফিজ বলেন, পরিবেশবিদদের কাজ বাড়ছে, নানা ক্ষেত্রেই তাদের ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে।
বার্জারের চিফ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসার
ড. এ এস এম ওবায়দুল্লাহ মাহমুদ বলেন, আমরা এমন রঙ নিয়ে গবেষণা করছি যেটি ক্ষতিকর গ্রিন হাউজ গ্যাসকে শুষে
নেবে। বাতাসে থাকা বিভিন্ন বিষাক্ত পদার্থ টেনে নেবে দেয়ালের রঙ। এধরনের পণ্য তৈরি
করে আমরা সফল হয়েছি। এমন আরও অনেক বিষয়ে গবেষণা চলছে। স্থাপনা নির্মাণের সময় এমন
আনুষাঙ্গিক অনেক বিষয়ে লক্ষ্য রাখা যেতে পারে, যেটি ছোট
পরিসরে হলেও পরিবেশের জন্য ভালো ভূমিকা রাখবে।
সেমিনারে পরিবেশ বিষয়ক মোটিভেশনাল স্পিকার হিসেবে
গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন নোবিপ্রবি'র সহকারী অধ্যাপক এবং পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ
এর সম্পাদক, শিক্ষা ও গবেষণা, ড.
আফসানা পারভীন শহীদ। তিনি ক্লাইমেট
মাইগ্রেশন বিষয়ক আমাদের করনীয় কি সেই ব্যাপারে তত্থ-উপাত্ত্ব সহ তার মূল্যবান
বক্তব্য প্রদান করেন।
পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ এর সম্পাদক, শিক্ষা ও গবেষণা
নোবিপ্রবি'র সহকারী অধ্যাপক
উক্ত সেমিনারে ২৫টি গবেষণাপত্রের এবস্ট্রাক্ট
প্রকাশ করে "THE ENVIRONMENTALIST" নামক পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট এর একটি
জার্নালের মোড়ক উন্মোচন করা হয়, যা
বাংলাদেশের পরিবেশ বিষয়ক গবেষণাগুলোকে নিয়ে বছরে ২ বার প্রকাশ করার ব্যাপারে আগ্রহ
জানিয়েছে জার্নালটির চীফ এডিটর ও পরিবেশবিদ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ
এর সাধারণ সম্পাদক, মোঃ মাহামুদুর রহমান পাপন।
আয়োজনে স্পনসর ছিলো বার্জার পেইন্ট
বাংলাদেশ লিমিটেড। কো-স্পনসর ছিলো - আরএকে সিরামিকস, জেইএম কনসালট্যান্টস লিমিটেড, বরাল কেমিক্যাল
কোম্পানি লিমিটেড, তিলোত্তমা গ্রুপের- নেক্সট ব্লক এএসি,
গ্রাসহোপার গ্রুপ অফ কোম্পানিজ, বেষ্ট
ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি এবং মাফ ক্রাফট।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন